এ বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৫২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি এবং ঢাকা মহানগরে ২৪৮টি মণ্ডপে পূজা হয়। সারা দেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা কমলেও ঢাকায় চারটি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজা কমিটির সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর জানান,
১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ১২ অক্টোবর মহানবমী ও দশমী পূজা এবং ১৩ অক্টোবর বিসর্জন। বিসর্জনের আগে রাজধানীসহ সারা দেশে বিজয়া শোভাযাত্রা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জয়ন্ত কুমার দেব জানান, যেখানে খোলা জায়গায় অস্থায়ী প্যান্ডেলে দুর্গাপূজা করা হবে, সেখানে সরকার নির্দেশিত বিধি-বিধান মেনে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে পূজা আয়োজন করতে হবে। প্রতিমা নির্ধারিত দিনেই বিসর্জন দিতে হবে। বিসর্জনের দিন শোভাযাত্রায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।
সারা দেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা কমার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা জানান, প্রস্তুতি নিয়ে অপারগ হওয়ায় এবং বন্যার কারণেও দুর্গত এলাকায় কোথাও কোথাও এবার পূজার আয়োজন করা হয়নি। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন সেনাপ্রধান। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
পুলিশের পাশাপাশি মাঠে থাকবে র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থায় আসন্ন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার পূজামণ্ডপকে কেন্দ্র করে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। ফলে এবারের পূজা খুব ভালোভাবে হবে। কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। তিনি বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থায় প্রতিবার তো পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকে, এবার বাড়তি হিসেবে বিজিবি ও সেনাবাহিনী যুক্ত হয়েছে।
এদিকে আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কোনো থ্রেট নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজায় মণ্ডপ এলাকা, বিসর্জন শোভাযাত্রা ও বিসর্জনের সময় বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। তবে এ সময় সব ধরনের মাদকদ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সঙ্গে সব ধরনের পটকা ও আতশবাজি ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাহী আদেশে বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি: বিশেষ প্রতিনিধি জানান, আগামী ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে এবারের দুর্গাপূজায় টানা চার দিন ছুটি উপভোগের সুযোগ পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে পুজামণ্ডপ মনিটরিং হবে
হিন্দু সম্প্রদায় থেকে যে সিকিউরিটি কনসান্স দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকার বিশেষভাবে কাজ করছে। আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে পূজা মণ্ডপগুলো ইউএনও অফিস ও থানা মনিটরিং করবে। সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য জরুরি সেবা ৯৯৯ বিশেষ একটি টিম কাজ করবে। পুলিশ ও র্যাবের টহল থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থার একটি বিশেষ টিম কাজ করবে।