শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
ভাষণে তিনি বলেন,
“আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শুরুতে সেনাপ্রধান বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তার আলোচনা সম্পর্কে আমাকে অবহিত করেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও এ সময় তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। সভায় নিহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সকল দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আটক সকল বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেওয়া হবে। সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে এবং লুটতরাজ, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করছি। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন, শিল্প কলকারখানা চালু রাখার লক্ষ্যে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন ও শিল্প কলকারখানা চালু রাখার লক্ষ্যে সকলকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্রনেত্রীবৃন্দ ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া যারা হত্যা এবং সহিংসতার সাথে জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী অতি শিগগির বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা হবে। দেশের সকল অফিস আদালত আগামীকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
প্রিয় দেশবাসী, আসুন আমরা দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে এগিয়ে নিতে আপনার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য আমি বিনয়ের সাথে আপনাদের অনুরোধ করছি। একটি সুন্দর ও সোনালী ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। খোদা হাফেজ। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”