Wednesday, November 6, 2024
Homeদেশের খবরবরগুনাতে নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ক্ষুদে বিজ্ঞানীর "ধর্ষণ প্রতিরোধক জুতা" আবিষ্কার

বরগুনাতে নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ক্ষুদে বিজ্ঞানীর “ধর্ষণ প্রতিরোধক জুতা” আবিষ্কার

ধর্ষণ প্রতিরোধে এক অভিনব ও অত্যাশ্চর্য ডিভাইস আবিষ্কার করেছে বরগুনার এভারগ্রীন স্কুলের নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ক্ষুদে বিজ্ঞানী। তার নাম আবদুল্লাহ আল সাইম নিনাত। সে বরগুনার পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের মোঃ হাবিবুল্লাহ কালামের ছেলে। নিনাতের আবিষ্কৃত এই ডিভাইস ধর্ষণ চেষ্টাকালে ভিকটিমের স্বজনদের কাছে ধর্ষণ চেষ্টার বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম। জুতার মাঝে তিনি বসিয়ে দিয়েছেন এমনই এক জিপিএস ট্রাকার এবং ২৫০ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক গান যা হেনস্থার শিকার নারীকে রক্ষা করবে ধর্ষকের হাত থেকে।

শুধু জুতা নয়, তিনি তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আবিষ্কার করে- বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ছোটবেলা থেকেই কোনোকিছু তৈরি বা আবিষ্কারের দিকে ছিল তার প্রবল আগ্রহ। ধর্ষণ প্রতিরোধে তার এই আবিষ্কারটি রীতিমতো এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছে ।

আবদুল্লাহ আল সাইম নিনাত দেশ বানীকে জানায়, এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্লাস থ্রি থেকে। ইউটিউবে একটি ইলেকট্রিক হিটার বানানো দেখার পর থেকে এই পথচলা শুরু। ছোট ছোট বিভিন্ন মোটর, পাখা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম। শুরুতে মা-বাবা সাপোর্ট করতেন না। ধীরে ধীর বুঝতে পেরে তারা আমার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ক্লাস থ্রি থেকে বিভিন্ন জিনিস যেমন ফ্যান, জাহাজ, বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি করতাম। আস্তে আস্তে বড় হলাম, অভিজ্ঞতা বাড়ল। অনলাইন থেকে জিনিসপত্র কিনে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম তখন। যখন ক্লাস সেভেনে উঠলাম তখন হঠাৎ করে একদিন মাথায় ড্রোন বানানোর চিন্তা আসে । যদিও তার আগে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেছিলাম। ড্রোনের চিন্তা আসার পর অনলাইন থেকে গুগল, ইউটিউব থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ধীরে ধীরে এগোতে থাকি। কাজ শুরু করে প্রথমবার ব্যর্থ হই। ড্রোন তৈরি করার সময় পর পর সাত বারই ব্যর্থ হই। এরপর অষ্টমবারে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ড্রোন তৈরি করতে সফল হই। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় প্লেন, লঞ্চ, রাডার, ব্লাইন্ড সানগ্লাস, ভেকু, ফোন কল ফায়ার এলার্ম, গ্যাস লিকেজ এলার্ম। এরকম বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রজেক্ট আমি তৈরি করেছি। বর্তমানে আমার সবচেয়ে বড় যে প্রজেক্ট তা হলো, ধর্ষণ প্রতিরোধ থেকে নারীদের রক্ষা পেতে জুতা আবিষ্কার করি।

নিনাত আরও জানান, এ বিষয়ে সরকারিভাবে আমি সহযোগিতা পেলে, এই জুতাটি আমি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে পারব, এটিকে আমি সম্পূর্ণ পরিধানযোগ্য একটি জুতা তৈরি করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।

আবদুল্লাহ আল সাইম নিনাত এর বাবা হাবিবুল্লাহ কালাম দেশ বানীকে বলেন, আমি একজন প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। আমার ছেলে ছোটবেলায় এসব চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় বিদ্যুতের শক খেয়েছে এবং তার এই কাজে আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়েছে। অযথা টাকা-পয়সাগুলো নষ্ট করার জন্য তখন আমি রাগারাগি করতাম । এরপর থেকে সে অনেক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি তৈরি করে আমাদের অবাক করে দিয়েছে। ওর এসব প্রতিভা দেখে এক সময় আমারও ভালোলাগা শুরু হয়। সরকারের উদ্দেশে বলতে চাচ্ছি, সরকারিভাবে আমার ছেলে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেলে সে আরও ভালো কিছু করে দেখাবে এবং উপকূলীয় জেলা বরগুনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments