Monday, December 23, 2024
Homeদেশের খবরদর্শনায় কেরুর সাবেক এমডিসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

দর্শনায় কেরুর সাবেক এমডিসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু চিনিকলের মৌসুমি শ্রমিক ও কর্মচারি সমন্বয়ের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিল্প মন্ত্রণালয় ও চিনি শিল্প করপোরেশনের তদন্ত দল অনুসন্ধান শুরু করেছে। গতকাল আজ মঙ্গলবার (২৯অক্টোবর) সকালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুজন অতিরিক্ত ও যুগ্ম সচিব এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন সচিবকে প্রধান করে তদন্ত কাজ শুরু করে। এসময় তারা কেরুর সাবেক এম ডি, মৃত কর্মচারির স্ত্রী ও মেয়েসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মাসুদুর রহমান অনুপস্থিত থাকায় তার সাথে কথা বলতে পারেনি তদন্ত দলের প্রতিনিধিরা। তদন্তের কাজ চলমান থাকবে বলে সাংবাদিকদের জানান তারা। কেরু চিনিকল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ ও ১৪ মে সারাদেশের চিনিকলের শ্রমিক ও কর্মচারিদের মৌসুমি থেকে স্থায়ীকরনের জন্য মৌখিক ও লিখিত পরিক্ষা নেয়া হয়। পরদিন ১৫ মে প্রার্থী যাচাই বাচাই করার সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের তৎকালিন সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়ছার স্বাক্ষরিত এক জরুরী পত্রে সব চিনিকলের শ্রমিক ও কর্মচারিদের মৌসুমি থেকে স্থায়ীকরন প্রক্রিয়া স্থগিত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সদর দপ্তরের নির্দেশ পাওয়ার পর অন্যান্য চিনিকল নিয়োগ বা সমন্বয় করা বন্ধ রাখলেও কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১০৪ জন মৌসুমি শ্রমিক কর্মচারিকে স্থায়ীকরনে ১৫ মে সমন্বয় স্থায়ীকরন চিঠি ও একই দিন যোগদান করলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এতো অল্প সময় ও তড়িঘড়ি করে সমন্বয় ও যোগদানের বিষয়টি চিনি করপোরেশনের নজরে আসে এবং তৎকালিন করপোরেশন চোয়ারম্যান শেখ সোয়েবুল আলম এন ডিসি (গ্রেড-১) কেরুতে শ্রমিক কর্মচারি সমন্বয়ে চাকরির বিধি লংঘন করার অভিযোগে ১৭ মে কেরুর সাবেক এম ডি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি জরুরীপত্র প্রেরন করেন। এ ঘটনায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) শামিমুল হক ও যুগ্ম সচিব (অর্থ) মনিরুজ্জামান মিয়া এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন সচিব আনোয়ার কবিরকে তদন্তভার দেয়া হয়। ওই কমিটির সদস্যরা গতকাল সোমবার স্বশরীকে কেরু চিনিকল পরিদর্শন করেন। এসময় কেরুর গেস্ট হাউজে কেরুর সাবেক এম ডি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, কেরুর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ, কর্মচরি আব্দুল মান্নান, কর্মচারি মহিদুল ইসলাম, কর্মচারি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও একজন সদ্য মারা যাওয়া মৌসুমি কর্মচারি ইউসুফ আলির স্ত্রী ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন প্রতিনিধি দল। পরে দুপুরে তদন্ত কমিটি কেরুর ডিসপাস শাখায় যায় এবং ১৫ মে’র ডিসপাসের ডকুমেন্ট দেখেন, সেখানে অসংখ কাটাকাটি ঘসামাজা দেখে বিব্রত হন তারা। এ সময় ডিসপাস শাখার একজন ও সংস্থাপন শাখার একজনের সাথে কথা বলেন। তারা দুজনই সাবেক জি এম (প্রশাসন) ইউসুঢ আলির নির্দেশ মোতাবেক কাটছাট করা হয়েছে বলে জানান। কেরুর অভিযুক্তসাবেক এম ডি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, হেড অফিস থেকে বিকালে নির্দেশনা আসার আগেই আমরা শ্রমিক ও কর্মচারিদের সমন্বয় চিঠি বিলি করে ফেলেছি। কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ জানান, নিয়োগের ব্যাপারে কোন অনিয়ম হয়নি নিয়মনীতি মেনেই তো সব কাজ করা হয়েছে। কর্মচারি মহিদুল ইসলাম জানান, কিছুটা অনিয়ম না হলে, মামলা হবে কেনো, করপোরেশন সচিব লিখিত নির্দেশনা দিয়েছে সেটাও মানা হয়নি, তা হলে এটা কি অনিয়মের মধ্যে পড়েনা? তবে অনেকের ধারনা, এতোদিন পর যখন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবরা ও করপোরেশন সচিবের সমন্বয়ের তদন্ত টিম যখন তদন্ত শুরু করেছে তখন কেউ না কেউ ফেসে যেতে পারেন। সন্দেহের তীর বেশ কয়েকজনের দিকে। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন সচিব আনোয়ার কবির বলেন, তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে। সময় হলে সব জানতে পারবেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments