বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।” তারা উল্লেখ করেছে, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেল যেভাবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট করছে, তা অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী।
বিবৃতিতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে আরও বলা হয়েছে, “এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন, এবং মাথায় রাখুন যে চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দ্বারা যাচাই করা হয়নি। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।”
মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার ঘোষণা দেন। তবে এই সময়ে উৎসুক জনতার একটি অংশ গণভবনে ঢুকে লুটপাট চালায় ও সংসদ ভবনসহ কিছু রাষ্ট্রীয় স্থাপনার ভেতরে ঢুকে পড়ে। যদিও শিক্ষার্থীরা তাদের বাঁধা দিয়েছেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি ঠেকাতে কাজ করেছেন। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ওপরও যেন কোনোপ্রকার হামলা না হয়, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষ সতর্ক ছিলেন। রাতভর মুসলিম ধর্মাবলম্বীরাও মন্দির পাহারা দিয়েছেন।
কিন্তু কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ও পুরনো ঘটনার ফুটেজ অতিরঞ্জিত করে প্রচার করতে শুরু করে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম, যেখানে বলা হয় শেখ হাসিনা দায়িত্ব ছাড়ার পরপরই হিন্দুদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে টুইটারেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় এবং ভারত থেকে অনেকে মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব নিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন দায়িত্বহীন ও উস্কানিমূলক কর্মকান্ডের ব্যাপারে সবশেষে টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া সমালোচনা করেন বাংলাদেশিরা।