ইন্দোনেশিয়ায় এক ডেলিভারি রাইডারের মৃত্যুর পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের গাড়িচাপায় গোজেক চালক আফফান কুরনিয়াওয়ান নিহত হওয়ার পর এই আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। সরকারি ভবনেও আগুন দেওয়া হয়েছে।
দেশটির জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলমান এই বিক্ষোভে ডেলিভারি রাইডাররা বড় ভূমিকা রাখছেন। তাঁদের প্রতি সংহতি জানাতে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের অনেকেই জনপ্রিয় অ্যাপ গ্র্যাব ও গোজেকের মাধ্যমে ইন্দোনেশীয় চালকদের জন্য খাবার অর্ডার করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #SEAblings হ্যাশট্যাগ ভাইরাল হয়েছে, যার মাধ্যমে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার মানুষ ইন্দোনেশীয় বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ চালকদের খাবার খেতে বলছেন, আবার কেউ চাইছেন তাঁরা পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিন।
ফিলিপাইনের সেবু দ্বীপের বাসিন্দা তারা (৩৪) বিবিসিকে বলেন, “ইন্দোনেশিয়ায় ভ্রমণের সময় মোটরসাইকেল ট্যাক্সি ব্যবহার করেছি। তারা সবসময়ই বন্ধুসুলভ। তাই এখন তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আমার দায়িত্ব মনে হয়েছে।” তিনি শুধু খাবার পাঠাননি, বরং অন্যদের উৎসাহিত করতে টাগালগ ভাষায় নির্দেশিকাও প্রকাশ করেছেন।
মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থী আয়মান হারিজ জানান, ইন্দোনেশীয়দের অন্যায়ের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “এটা প্রমাণ করে জনগণের শক্তি আছে। যখন কিছু তাদের ক্ষতি করে, তারা ভয় না পেয়ে প্রতিরোধ করে।”
জাকার্তার ডেলিভারি রাইডার তৌফিক বলেন, “বিদেশ থেকে খাবার পাঠানো আমাদের জন্য অনেক উপকারী। বিক্ষোভের পর থেকে স্থানীয় অর্ডার কমে গেছে। তাই এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের সত্যিই সাহায্য করছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক রাইডার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক চালক কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিঙ্গাপুরের এক দাতাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
যদিও সঠিকভাবে কত মানুষ এই সহায়তা উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন তা জানা যায়নি, তবে গ্র্যাব জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার বাইরে থেকে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অর্ডারের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।