দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে এক হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। ভারতের হস্তক্ষেপ, অপপ্রচার ও উসকানির বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে তারা।
বুধবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথ সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ প্রায় ৩৫টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই ঘণ্টার এ সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি একসঙ্গে। কোনো মতভেদ বা কাউকে ছাড়িয়ে পাইনি। আমাদের ঐক্যই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।”
৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। এ প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যের আহ্বান জানান।
দেশপ্রেমের অঙ্গীকার
বৈঠকে উপস্থিত সব দল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করে। বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা সবাই মিলে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব।”
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, “সব ভিন্নতা ভুলে দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভারতের উসকানিমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
প্রধান প্রস্তাবগুলো
১. ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সরকারের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা।
২. দেশের অভ্যন্তরে সম্প্রীতি বজায় রাখতে ৬৪ জেলায় সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব।
৩. ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলো প্রকাশ এবং দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি।
৪. একটি জাতীয় পলিটিক্যাল কাউন্সিল গঠন ও নিরাপত্তা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার সুপারিশ।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, “অসত্য প্রচারণার বিরুদ্ধে সত্য দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ করতে হবে।”
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক প্রস্তাব দেন, “আগামী দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন এবং ছয় মাসের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।”
ঐক্যের বার্তা
বৈঠকের সারমর্ম তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “মতভেদ থাকতে পারে, তবে দেশের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমাদের ওপর আর কোনো অপপ্রচার চলতে দেওয়া হবে না।”