ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং অন্তত ১৬৪ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম রয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় তিনি বিমানটিকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিমানটি মাইলস্টোন স্কুলের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়ন করে। মাত্র ১২ মিনিট পর, ১টা ১৮ মিনিটে বিমানটি মাইলস্টোন স্কুলের উত্তরা শাখার ভবনে গিয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, “স্কুল ভবনের প্রথম তলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির এবং দ্বিতীয় তলায় দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। এ ছাড়া সেখানে অধ্যক্ষের অফিস, মিটিং রুম ও একটি কোচিং ক্লাস ছিল। স্কুল ছুটির পরপরই অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সেখানে অবস্থান করছিলেন।”
আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার পেছনে যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তবে বিস্তারিত তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানটিকে জনবিরল স্থানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
বিধ্বস্ত বিমানের ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়েছে। নিহত ও আহতদের তালিকা অনুযায়ী, সিএমএইচ-ঢাকায় ১৪ জন আহত এবং ১১ জন নিহত, বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন আহত এবং ২ জন নিহত, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৬০ জন আহত এবং ১ জন নিহত, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন আহত ও ২ জন নিহত এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২ জন নিহত হয়েছেন। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন আহত হলেও কেউ মারা যাননি।
এ দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এবং সরকারের বিভিন্ন মহল। তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।