নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৪ জন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৬ উপদেষ্টার চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হয়। শপথ অনুষ্ঠানটি বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তালিকায় মোট ১৭ জন উপদেষ্টার নাম ছিল। তবে, বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা, এবং ফারুক-ই-আজম ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় তারা শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন যারাঃ
১. ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন।
২. ড. আসিফ নজরুল: লেখক, রাজনীতি বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সোয়াস, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং জার্মানির বন শহরে পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন।
৩. আদিলুর রহমান খান: মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবী, যিনি মানবাধিকার সংস্থা “অধিকার”-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং বাংলাদেশের সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
৪. এ এফ হাসান আরিফ: সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
৫. তৌহিদ হোসেন: সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান: পরিবেশকর্মী ও আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ লাভ করেন।
৭. শারমিন মুরশিদ: ব্রতী নামক সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
৮. ফারুক-ই-আজম: মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম বন্দরে পরিচালিত অপারেশন জ্যাকপটের উপ-অধিনায়ক।
৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন: সাবেক নির্বাচন কমিশনার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত।
১০. সুপ্রদীপ চাকমা: সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
১১. ফরিদা আখতার: লেখক, গবেষক, এবং বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক।
১২. বিধান রঞ্জন রায়: জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
১৩. আ. ফ. ম খালিদ হাসান: বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর।
১৪. নূরজাহান বেগম: গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
১৫. মো. নাহিদ ইসলাম: কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া: কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা।