স্বাধীনচেতা মানুষেরা সবসময়ই ধরাবাঁধা চাকরির চেয়ে ব্যবসার প্রতি বেশি আগ্রহী ছিলেন। বর্তমানেও জেন–জি প্রজন্মের তরুণদের মধ্যেও এ প্রবণতা স্পষ্ট। যুক্তরাজ্যের স্যানট্যানডার ব্যাংকের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ জেন–জি তরুণ-তরুণী সাধারণ চাকরির চেয়ে নিজেদের ব্যবসা শুরু করতেই বেশি আগ্রহী।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭৬ শতাংশ জেন–জি প্রজন্মের তরুণ কারও অধীনে কাজ করতে চান না এবং ৯টা-৫টার একঘেয়ে কর্মজীবন তাঁদের পছন্দ নয়। তাঁদের ৭৭ শতাংশ মনে করেন, ব্যবসা শুরু করার জন্য তাঁদের যথেষ্ট যোগ্যতা রয়েছে। ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের প্রজন্মের তুলনায় জেন–জি তরুণদের মধ্যে “নিজের বস হওয়ার” আকাঙ্ক্ষা বেশি। মিলেনিয়ালদের মধ্যে এ প্রবণতা ছিল ৫৭ শতাংশ, জেনারেশন এক্সের মধ্যে ৩৬ শতাংশ এবং বেবি বুমারদের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ।
জেন–জি প্রজন্মের তরুণদের (১৯৯৭-২০১২ সালে জন্মগ্রহণকারী) বিশ্বাস, ডিজিটাল যুগে ব্যবসাসংক্রান্ত তথ্য ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতিও তাঁদের ব্যবসার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৩৯ শতাংশ তরুণ মনে করেন, স্মার্টফোন ব্যবহার করে ব্যবসা করা সম্ভব এবং ৪৫ শতাংশ মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আয় করা যেতে পারে।
অন্যদিকে, সান ফ্রান্সিসকো–ভিত্তিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘আপওয়ার্ক’-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ জেন–জি সপ্তাহে গড়ে ৪০ ঘণ্টা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন। এদের এক-তৃতীয়াংশ ফ্রিল্যান্সিং করছেন দুই বছরের বেশি সময় ধরে এবং তাঁরা সেটাই চালিয়ে যেতে চান।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, জেন–জি প্রজন্মের এই মনোভাবের মূল কারণ হলো, পেশার ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আরোপের আকাঙ্ক্ষা। তাঁরা পুরোনো নীতি–নৈতিকতাসম্পন্ন কর্তাদের অধীনে কাজ করতে আগ্রহী নন, বরং নিজেদের শর্তে কাজ করতে চান। তাই তাঁরা ৯টা-৫টার প্রথাগত চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন।
জেন–জিরা মনে করেন, কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকের সঙ্গে একই আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করতে হবে, যেখানে পোশাকের বিধানও তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। করোনা মহামারির পর এই প্রজন্মের চিন্তার পরিবর্তন আরও স্পষ্ট হয়েছে, যেখানে তাঁরা দীর্ঘদিন একই চাকরিতে থাকার পরিবর্তে নিজস্ব পথ খুঁজছেন।