জর্জিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের একটি রাজ্য। এর উত্তরে টেনেসি এবং উত্তর ক্যারোলিনার সীমানা; উত্তর-পূর্বে দক্ষিণ ক্যারোলিনা; দক্ষিণ-পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর; দক্ষিণে ফ্লোরিডা; এবং পশ্চিমে অ্যালাবামা। জর্জিয়া ১৭৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই সময়ে – বর্তমান অ্যালাবামা এবং মিসিসিপি রাজ্যগুলির বৃহদাংশ সহ এর সীমানা আরও বিস্তৃত ছিল।
সাভানা এবং চাট্টাহুচি নদী যথাক্রমে দক্ষিণ ক্যারোলিনা এবং অ্যালাবামার সাথে জর্জিয়ার পূর্ব এবং পশ্চিম সীমানার বড় অংশ তৈরি করেছে। আটলান্টা জর্জিয়ার রাজধানী। ইউরোপীয়রা বসতি স্থাপনের আগে জর্জিয়া ছিল ঢিবি নির্মাণ সংস্কৃতি অধ্যুষিত এলাকা। জেমস ওগলথর্প ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৭৩৩ সালে জর্জিয়ার ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমান জর্জিয়ার প্রথম বাসিন্দারা প্রায় ১০,০০০ থেকে ১২,০০০ বছর আগে এই অঞ্চলে বসতি শুরু করেছিল।
জর্জিয়ায় স্থায়ী থেকে অর্ধস্থায়ী গ্রাম বসতি ১০০০ খৃষ্টপূর্ব থেকে ৯০০ খৃষ্টপূর্ব সময়ের মধ্যে উডল্যান্ড সংস্কৃতির উত্থানের সময় শুরু হয়েছিল। ছোট, ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা, স্থায়ীভাবে দখল করা গ্রামগুলিতে উডল্যান্ডের কৃষিজিবীরা বাস করত। এসব কৃষিজিবীরা তাদের সাধারন ফসলের সাথে পরিপূরক হিসাবে বিভিন্ন বন্য খাবার সংগ্রহ করত। উডল্যান্ড সংস্কৃতির পর পর এখানে মিসিসিপি নদী উপত্যকায় বিকশিত হওয়া এবং এই নামে নামকরণ হওয়া মিসিসিপিয়ান সংস্কৃতির পত্তন ঘটে এবং এসময় ঢিবি নির্মাণের ঐতিহ্য অব্যাহত থাকে। এগুলি উৎসব বা আনুষ্ঠানিক উদ্দেশ্যে এবং নেতৃস্থানীয়দের বাড়ি নির্মান স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হত। এই সংস্কৃতিটি প্রধানদের নেতৃত্বে শ্রেণিবদ্ধ সামাজিক শৃঙ্খলা সম্পন্ন শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের বিকাশ ঘটায়। ভুট্টা, মটরশুটি, স্কোয়াশ, কুমড়া এবং তামাকের উপর নির্ভরশীল উৎপাদনশীল এবং নির্ভরযোগ্য কৃষি ব্যবস্থা প্রায়শই উদ্বৃত্ত ফসল যোগান দিত। ১৫০০-এর দশকে ইউরোপীয়রা আসার সময় মিসিসিপিয়ান সংস্কৃতি এই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ছিল।
১৫৪০ সালের দিকে স্প্যানিশ অভিযাত্রী হার্নান্দো ডি সোটো রূপা এবং স্বর্নের সন্ধানে বর্তমানের জর্জিয়া অঞ্চলে প্রথম ইউরোপীয় অভিযানের নেতৃত্ব দেন। সেখানে তিনি মিসিসিপিয়ান সংস্কৃতির অত্যন্ত সংগঠিত কৃষিজীবিদের বাধার সম্মুখীন হন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্প্যানিশ অভিযান ছিল আদিবাসীদের জন্য বিপর্যয়কর। তারা যে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে বা ক্রীতদাস করেছে শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি অনুসন্ধানকারীরা অজ্ঞ্যাতসারে -হাম, গুটিবসন্ত এবং হুপিং কাশি-এর মতো রোগগুলি ছড়ানোর মাধ্যমে-হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং জর্জিয়ায় মিসিসিপিয়ান সংস্কৃতির চূড়ান্ত পতনের জন্যও দায়ী।
১৭ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ব্রিটিশদের ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে শেষপর্যন্ত গুয়াল থেকে স্প্যানিশ মিশন প্রত্যাহার করা হয়। স্প্যানিশ শক্তি হ্রাস পাওয়া এবং ব্রিটিশ শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে বর্তমান জর্জিয়ার এলাকাটি বিতর্কিত ভূমি হিসাবে পরিচিত হয়। জর্জিয়ার উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ট্রাস্ট ১৭৩২ সালে জর্জ II (যার নামে উপনিবেশটির নামকরণ করা হয়েছিল) ঘোষিত একটি সনদ অনুমোদন করে। সনদটি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রবর্তক ছিলেন ইংরেজ সৈনিক এবং সমাজসেবী জেমস এডওয়ার্ড ওগলথর্প, যিনি একটি উপনিবেশ খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন যেখানে ইংল্যান্ডের দরিদ্ররা একটি নতুন জীবন শুরু করতে পারে। তিনি এবং অন্যান্য ট্রাস্টিরা বসতি স্থাপনকারীদের মদ, সিল্ক এবং মশলা উৎপাদন করতে উৎসাহিত করেছিলেন এবং এইভাবে ইংল্যান্ডকে বিদেশী উৎসের উপর নির্ভরতা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হন। উপনিবেশটি দক্ষিণ এবং পশ্চিমে স্প্যানিশ এবং ফরাসিদের বিরুদ্ধে একটি বাঁধা হিসেবে কাজ করে।
অস্থিরতা এবং অধিবাসীদের দেশত্যাগের মত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ট্রাস্টিরা তাদের সনদের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগে অর্থ্যাৎ ১৭৫২ সালে উপনিবেশের সমস্ত ক্ষমতা ব্রিটিশ সরকারের কাছে সমর্পণ করে। সেই সময় প্রধানত চিনি, চাল এবং নীল উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে বৃক্ষরোপণ কৃষি একটি অবস্থান করে নিয়েছিল। এই কৃষি ব্যবস্থা দাসত্বের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল এবং উপনিবেশের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি হয়ে ওঠে। ১৭৭৬ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে আমেরিকান বিপ্লবে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যে তেরোটি উপনিবেশ বিদ্রোহ করেছিল জর্জিয়া প্রদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। জর্জিয়া রাজ্যের প্রথম সংবিধান ১৭৭৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদন করা হয়েছিল। জর্জিয়া ছিল ১০ তম রাজ্য যেটি ২৪ জুলাই, ১৭৭৮ সালে কনফেডারেশনের ধারা/শর্তাবলী অনুমোদন করে এবং ২ জানুয়ারী, ১৭৮৮ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুমোদনকারী চতুর্থ রাজ্য ছিল। বিপ্লবের পরে এখানে বসতি দ্রুত সম্প্রসারিত হয়, বিশেষ করে অগাস্টা থেকে পশ্চিম দিকে মধ্য জর্জিয়ার ভবিষ্যতের “তুলা কাউন্টিগুলিতে”।
১৮৬১ সালের গোড়ার দিকে জর্জিয়া কনফেডারেসিতে যোগ দেয় (বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিনিধিদের সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে) এবং গৃহযুদ্ধের একটি প্রধান ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। ১৮৭০ সালে পুনর্গঠন যুগের পর জর্জিয়া ইউনিয়নে পুনরায় যোগ দেয়া শেষ কনফেডারেট রাজ্য ছিল।
১৯ শতকের মাঝামাঝি নাগাদ অধিকাংশ শ্বেতাঙ্গ জর্জিয়ান বেশিরভাগ দক্ষিণবাসীর মত দাসপ্রথাকে তাদের সমাজের জন্য অর্থনৈতিকভাবে অপরিহার্য হিসাবে গ্রহন করেছিল। ১৮৬১ সালে আমেরিকান গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বেশিরভাগ দক্ষিনাঞ্চলীয় শ্বেতাঙ্গ (দাস মালিক হোক বা না হোক) আমেরিকার কনফেডারেট স্টেটস (কনফেডারেসি) এর প্রতিরক্ষায় যোগ দিয়েছিল, যা জর্জিয়ার সৃষ্টিতে সাহায্য করেছিল।
জর্জিয়ার পুনর্গঠন সহিংস এবং সংক্ষিপ্ত ছিল। ১৮৬৮ সালে উত্তর অঞ্চলে জন্মগ্রহণকারী ব্যবসায়ী রুফাস বুলক গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং একই সাথে রিপাবলিকান পার্টি জর্জিয়ায় ক্ষমতায় আসে। প্রতিউত্তরে জর্জিয়া ডেমোক্র্যাট এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী, কু ক্লাক্স ক্ল্যান, তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার রাজত্ব চালায় এবং এই প্রক্রিয়ায় শত শত আফ্রিকান আমেরিকানকে হত্যা করে।
১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের প্রথম দিকে জাতিগত সংঘাত রাষ্ট্রের ইতিহাসের কলংকিত অধ্যায়। ১৮৯০-এর দশকে ডেমোক্র্যাটরা আফ্রিকান আমেরিকান ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে এবং জর্জিয়া জুড়ে সমস্ত সরকারী জায়গায় কৃষ্ণাংগ এবং শ্বেতাঙ্গদের আলাদা করার জন্য একটি পৃথকীকরণ ব্যবস্থা তৈরি করে। একটি পৃথক স্কুল ব্যবস্থা দ্বারা কালো সম্প্রদায়কে নিকৃষ্টতর শিক্ষা প্রদান করা হোত। ১৮৯০ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে জর্জিয়ায় সন্ত্রাসী জনতা অনেক আফ্রিকান আমেরিকানকে পিটিয়ে হত্যা করে; ১৯০৬ সালে আটলান্টায় শ্বেতাঙ্গ জনতা কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা সৃষ্টি করে, এতে বেশ কিছু কৃষ্ণাঙ্গ বাসিন্দা নিহত হয় এবং অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়।
এতদসত্বেও সেই একই বছরগুলিতে আটলান্টায় আফ্রিকান আমেরিকানদের জন্য বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কলেজ তৈরি করা হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে পুরুষদের জন্য মোরহাউস এবং মহিলাদের জন্য স্পেলম্যান। এই প্রতিষ্ঠানগুলি শহরকে আফ্রিকান আমেরিকান সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জিয়ান উত্তরে “গ্রেট মাইগ্রেশন” এর অংশ হিসেবে রাজ্য ত্যাগ করেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জর্জিয়ার অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলেছিল কারণ কৃষি পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল এবং রাজ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলি প্রসারিত হয়েছিল – বিশেষ করে কলম্বাসের ফোর্ট বেনিং। মারিয়েটা একটি বিশাল কারখানার জায়গায় পরিণত হয়েছিল যেখানে B-29 বোমারু বিমান তৈরি করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফ্রিকান আমেরিকানরা যখন বিচ্ছিন্নতাকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করে তখন জর্জিয়ানরা রাষ্ট্রের জাতিগত দ্বন্দ্বের সমাধান করতে বাধ্য হয়।
১৯৫৫-১৯৫৬ সালে মন্টগোমেরি, অ্যালাবামা বাস বয়কট থেকে শুরু করে সক্রিয় বিক্ষোভের উত্থানের মধ্য দিয়ে জর্জিয়ায় আফ্রিকান আমেরিকানরা বিচ্ছিন্নতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে জড়িত হয়ে পড়ে। এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল আটলান্টার অধিবাসী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের কাজ। তিনি সেই শহরে ১৯৫৭ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় খ্রিস্টান নেতৃত্ব সম্মেলন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং সেখান থেকে দেশজুড়ে একের পর এক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যা নাগরিক অধিকার আন্দোলন হিসাবে পরিচিত হয়েছিল। লুথার কিং আটলান্টায় থাকতেন এবং ১৯৬৮ সালে তাকে হত্যা করার পর সেখানে সমাহিত করা হয়েছিল। তার সমাধি এখন একটি জাতীয় ঐতিহাসিক স্থান।
১৯৭০-এর দশকে আটলান্টার কৃষ্ণাঙ্গ জনসংখ্যা শহরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার কারণে আফ্রিকান আমেরিকানরা উচ্চ পদে নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৭২ সালে মার্কিন কংগ্রেসে অ্যান্ড্রু ইয়ং এবং ১৯৭৩ সালে মেয়র পদে মেনার্ড জ্যাকসন ছিলেন উল্লেখযোগ্য। তারপর থেকে আটলান্টা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম জর্জিয়ার অনেক পদে আফ্রিকান আমেরিকানরা নির্বাচিত হয়ে আসছে।
জিমি কার্টার ম্যাডক্সের স্থলাভিষিক্ত হয়ে আসার পর তিনি একজন জাতিগত মধ্যপন্থী শাসক হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন এবং রাজ্যকে একটি প্রগতিশীল ভাবমূর্তির দিকে এগিয়ে নেয়ে যান যা আটলান্টা শহরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। ১৯৭৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে কার্টার প্রথম জর্জিয়ান যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে রাজ্যটি জাতীয় স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৫০ এর দশক থেকে জর্জিয়ার অর্থনীতি এবং জনসংখ্যা জাতীয় গড় থেকে অনেক দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির বেশিরভাগই আটলান্টা এবং এর আশেপাশে ঘটেছে। আটলান্টা ২০ শতকের শেষের দিকে প্রধানত ১৯৯৬ সালের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মর্যাদা অর্জন করে
২০১০ সালের হিসাবে জর্জিয়ার বাসিন্দাদের ৮৭.৩৫% (৫ বছর বা তার বেশি বয়সীরা) বাড়িতে প্রাথমিক ভাষা হিসাবে ইংরেজিতে কথা বলে, যেখানে ৭.৪২% স্প্যানিশ, ০.৫১% কোরিয়ান, ০.৪৪% ভিয়েতনামীজ, ০.৪২% ফরাসি, ০.৩৮% চীনা (যার মধ্যে ম্যান্ডারিন রয়েছে), এবং জার্মান ভাষায় কথা বলে। সর্ব মোট ১২.৬৫% জর্জিয়ার জনসংখ্যা (৫ বছর বা তার বেশি বয়সীরা) ইংরেজি ছাড়া অন্য মাতৃভাষায় কথা বলে।
জর্জিয়ায় ধর্মীয় অনুসারীর গঠন হল ৭০% প্রোটেস্ট্যান্ট, ৯% ক্যাথলিক, ১% মরমন, ১% ইহুদি, ০.৫% মুসলিম, ০.৫% বৌদ্ধ এবং ০.৫% হিন্দু। নাস্তিক, আস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী এবং অন্যান্য অসংলগ্ন লোকেরা জনসংখ্যার ১৩%।
২০১৮ সালে জর্জিয়ার মোট রাষ্ট্রীয় উৎপাদন ছিল ৬০২ বিলিয়ন ডলার। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জর্জিয়া রাজ্য হিসাবে ‘স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস’ এর (AAA) সর্বোচ্চ ক্রেডিট রেটিং পেয়ে আসছে এবং AAA রেটিং প্রাপ্ত মাত্র ১৫টি রাজ্যের মধ্যে একটি। জর্জিয়া যদি একটি স্বতন্ত্র দেশ হত তবে এটি ২০০৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বের ২৮তম বৃহত্তম অর্থনীতি হত। যাত্রী এবং বিমান ট্রাফিক উভয় দ্বারা পরিমাপ করে আটলান্টাকে বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে গন্য করা হয়। এছাড়াও সাভানা বন্দর উত্তর আমেরিকার চতুর্থ বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর এবং দ্রুত বর্ধনশীল কন্টেইনার বন্দর।
আটলান্টা এলাকায় ওয়ার্ল্ড অফ কোক, জর্জিয়া অ্যাকোয়ারিয়াম, চিড়িয়াখানা আটলান্টা এবং স্টোন মাউন্টেন এর মত গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনের আকর্ষণ রয়েছে। স্টোন মাউন্টেন জর্জিয়ার “সবচেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণ”; প্রতি বছর চার মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক এখানে ভ্রমন করে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে ২০১০ সালে আটলান্টার জর্জিয়া অ্যাকোয়ারিয়াম ছিল বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাকোয়ারিয়াম। কলেওয়্যে গার্ডেন পশ্চিম জর্জিয়ার একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। এলাকাটি গল্ফারদের কাছেও জনপ্রিয়। গোল্ডেন আইলস হল ব্রান্সউইকের কাছে জর্জিয়ার আটলান্টিক উপকূলে সারি বাধা দ্বীপ যেখানে সমুদ্র সৈকত, গল্ফ কোর্স এবং জাতীয় সমুদ্র তীর কাম্বারল্যান্ড দ্বীপ অন্তর্ভুক্ত।
জর্জিয়া কাউন্টি এবং শহরের সরকারী স্কুল ব্যবস্থাগুলি স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত সদস্যদের সাথে নিয়ে স্কুল বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। জর্জিয়ায় ৮৫টি সরকারী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরি কলেজ রয়েছে এবং ৪৫টিরও বেশি বেসরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জর্জিয়ার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফ্ল্যাগশিপ রিসার্চ ইউনিভার্সিটি, ১৭৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রাচীনতম স্টেট-চার্টার্ড ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকার পাবলিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্মস্থান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত “ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়া”। রাষ্ট্রীয় লটারি দ্বারা অর্থায়িত HOPE স্কলারশিপ সমস্ত জর্জিয়ার বাসিন্দা যারা হাই স্কুল থেকে স্নাতক প্রাপ্ত বা সাধারণ শিক্ষাগত উন্নয়ন সনদ অর্জন করেছেন তাদের জন্য উপলব্ধ। শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ৩.২ বা উচ্চতর গ্রেড পয়েন্ট গড় (জি পি এ) বজায় রাখতে হবে এবং রাজ্যের একটি পাবলিক কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতে হবে।
রাজ্যে ১৫১টি সাধারণ হাসপাতাল, ১৫,০০০ জনেরও বেশি ডাক্তার এবং প্রায় ৬,০০০ ডেন্টিস্ট রয়েছে। নিয়মিত ব্যায়ামে নিয়োজিত বাসিন্দাদের শতাংশে রাজ্যটি চল্লিশতম স্থানে রয়েছে।
এক নজরে জর্জিয়া
রাষ্ট্রীয় মর্যাদার আগে : জর্জিয়া প্রদেশ
ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্তি : ২ জানুয়ারী, ১৭৮৮
রাজধানী : আটলান্টা
সরকার
গভর্নর: ব্রায়ান কেম্প (রিপাবলিকান)
লেফটেন্যান্ট গভর্নর: জিওফ ডানকান (রিপাবলিকান)
আইনসভাঃ জর্জিয়ার সাধারণ পরিষদ
উচ্চকক্ষ সিনেট
নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস
বিচার বিভাগ : জর্জিয়ার সুপ্রিম কোর্ট
মার্কিন সিনেটর : জন অসফ (ডেমোক্রেট), রাফেল ওয়ার্নক (ডেমোক্রেট)
মার্কিন হাউজ প্রতিনিধিঃ ৮ জন রিপাবলিকান, ৬ জন ডেমোক্রেট
আয়তন
মোট ৫৯,৪২৫ বর্গ মাইল (১৫৩,৯০৯ বর্গ কিমিঃ)
স্থলভাগ : ৫৭,৯০৬ বর্গ মাইল (১৪৯,৯৭৬ বর্গ কিমিঃ)
জলভাগ : ১,৫১৯ বর্গ মাইল (৩,৯৩৩ বর্গ কিমিঃ)
উচ্চতা ৬০০ ফুট (১৮০ মিটার)
জনসংখ্যা (২০২০)
মোট ১০,৭১১,৯০৮
গড় পরিবারের আয় : ৫৬,১৮৩ ডলার
সরকারী ভাষা : ইংরেজি
কথ্য ভাষা : ইংরেজি
স্প্যানিশ (৭.৪২%)
অন্যান্য (২.৮২%)
সময় অঞ্চল : UTC (-) ০৫:০০
গ্রীষ্মকাল UTC (-) ০৪:০০
USPS সংক্ষিপ্ত নামঃ GA
ঐতিহ্যবাহী সংক্ষিপ্ত নামঃ Ga.