Thursday, September 19, 2024
Homeরাজ্য পরিচিতিঅ্যালাবামা

অ্যালাবামা

অ্যালাবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের একটি রাজ্য। এটি ১৮১৯ সালে ২২তম রাষ্ট্র হিসেবে ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ রাজ্যের উত্তরে টেনেসি, পূর্বে জর্জিয়া, দক্ষিণে ফ্লোরিডা ও মেক্সিকো উপসাগর, এবং পশ্চিমে মিসিসিপি। অ্যালাবামার মোট আয়তন ১৩৫,৭৬৭ বর্গ কিঃমিঃ এবং জনসংখ্যা ১৪,৯০৩,১৮৫।

অ্যালাবামা এখানকার রাষ্ট্রীয় পাখি ‘ইয়েলো হ্যামার’ এর নামে পরিচিত। অ্যালাবামা “হার্ট অফ ডিক্সি” এবং “কটন স্টেট” নামেও পরিচিত। রাষ্ট্রীয় বৃক্ষ লম্বা পাতার পাইন, এবং রাষ্ট্রীয় ফুল হল ক্যামেলিয়া। অ্যালাবামার রাজধানী মন্টগোমারি। প্রাচীনতম শহর মোবাইল, ফরাসি উপনিবেশিকদের দ্বারা ১৭০২ সালে ফরাসি লুইজিয়ানার রাজধানী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

বর্তমান অ্যালাবামা রাজ্যে মূলত বিভিন্ন আদিবাসীদের বসবাস ছিল। স্পেনীয়রা ছিলেন এখানে প্রথম পরিচিত ইউরোপীয় অভিযাত্রী, যারা ১৫১৯ সালে মোবিল (Mobile) উপত্যকায় আসেন। অনুসন্ধানের বড় চাপ আসে ১৫৪০ সালে, যখন হেরনান্দো ডি সোতো এবং তার প্রায় ৫০০ সৈন্য সোনার খোঁজে টেনেসি নদীর উপত্যকা দিয়ে অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তবে চকতাও প্রধান তুসকালুসার সাথে একটি যুদ্ধের সময় এই এলাকায় কয়েক হাজার আদিবাসী আমেরিকানের মৃত্যু ঘটে। এটা ছিল উত্তর আমেরিকার ইউরোপীয় এবং আদিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে রক্তাক্ত একক যুদ্ধ। ডি সোতো অবশ্য শেষ পর্যন্ত কোন স্বর্ণ খুঁজে পাননি, এবং তার অনুসরণকারী স্পেনীয়রা অ্যালাবামায় বসতি স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়।

ফরাসিরা ১৭০২ সালে পুরাতন মোবিল অঞ্চলের প্রথম ইউরোপীয় বসতি প্রতিষ্ঠা করেন। এই এলাকা লা লুহিজিয়ানের অংশ হিসাবে ১৭০২ থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ফরাসিদের দখলে ছিল। ফরাসিরা ‘seven year’s war’-এ ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হলে এ অঞ্চল ১৭৬৩ থেকে ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ পশ্চিম ফ্লোরিডার অংশ হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধে বিজয়ের পর, এ অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং স্পেনের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। স্পেন ১৭৮৩ সাল থেকে ১৮১৩ সালের ১৩ এপ্রিল মার্কিন বাহিনীর কাছে মোবিলের স্প্যানিশ সেনানিবাসের আত্মসমর্পণ পর্যন্ত এই পশ্চিমা অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম হয়।

১৭১৯ সালে পোর্ট ডাউফিনে আফ্রিকানদের একটি ক্রীতদাসবাহী জাহাজ পৌছানোর মাধ্যম ডাউফিন দ্বীপে প্রথম আফ্রিকানদের বসবাস শুরু হয়। ১৭৬৩ সালের প্যারিস চুক্তি ব্রিটেনকে তখন অ্যালাবামার একমাত্র বাসভূমি মবিল এলাকা প্রদান করে। প্যারিসের আরেকটি চুক্তিতে (১৭৮৩), যা আনুষ্ঠানিকভাবে আমেরিকান বিপ্লবের সমান্তি ঘটায়, স্পেন মবিল লাভ করে, এবং নতুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশিষ্ট এলাকা লাভ করে। ১৮১৩ সালে আমেরিকা মবিলকে ১৮০৩ সালের “লুজিয়ানা ক্রয়” এর অংশ হিসাবে দাবী করে এ অঞ্চল থেকে স্পেনীয়দের বিতাড়িত করে এবং সম্পূর্ন রাজ্যে তাদের কতৃত্ব কায়েম করে। ১৮৩২ সালে অ্যালাবামার আদিবাসীরা এ অঞ্চলের ভূমির অধিকারের দাবী এক প্রকার সম্পূর্ণরুপে ছেড়ে দেয়। যদিও এসব আদিবাসীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ দক্ষিনাঞ্চলে থেকে যায় এদের অধিকাংশের বসবাস এখন ওক্লাহামাতে। এসময় তুলা চাষ সম্প্রসারনের সাথে সাথে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা ক্রীতদাসদের নিয়ে আসতে থাকে।

অ্যালাবামা ১৪ ডিসেম্বর, ১৮১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ২২তম রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। & জুলাই থেকে ২ আগস্ট, ১৮১৯ পর্যন্ত প্রতিনিধিরা নতুন রাষ্ট্রীয় সংবিধান প্রণয়নের জন্য হান্টসভিলে মিলিত হন। হান্টসভিল ১৮১৯ থেকে ১৮২০ পর্যন্ত অ্যালাবামার অস্থায়ী রাজধানী ছিল এবং এরপর ডালাস কাউন্টির কাহাবায় স্থানান্তরিত হয়। কাহাবা ১৮২০ থেকে ১৮২৫ পর্যন্ত রাজ্যের প্রথম স্থায়ী রাজধানী ছিল তবে এখন এটি একটি ভূতুড়ে নগরী হয়ে আছে।

১৮২০ সালের মধ্যে অ্যালাবামার জনসংখ্যা ১২৫,০০০ এ উন্নিত হয় যার মধ্যে প্রায় ৫০০ জন ছিল মুক্তিপ্রাপ্ত কৃষ্তাংগ। ১৮৩০ সালে জনসংখ্যা ছিল ৩০০,০০০ যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ছিল ক্রীতদাস, এবং তুলা ছিল এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকারী ফসল। ৩০ জানুয়ারী ১৮৪৬ অ্যালাবামা আইনসভা ঘোষণা করে যে তারা রাজধানী মন্টগোমারিতে স্থানান্তরের জন্য ভোট দিয়েছে। ১৮৬০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৬৪,২০১ এ দাঁড়ায় ঘার প্রায় অর্ধেক আফ্রিকান আমেরিকান ক্রীতদাস ছিল।

১১ জানুয়ারী ১৮৬১ অ্যালাবামা ইউনিয়ন থেকে এর বিচ্ছিন্নতা ঘোষণা করে। কয়েকদিন একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র থাকার পর, এটি “আমেরিকার কনফেডারেট স্টেটস” এ যোগদান করে। কনফেডারেসির রাজধানী প্রাথমিকভাবে মন্টগোমারিতে ছিল। অ্যালাবামা আমেরিকার গৃহযুদ্ধে ব্যাপকভাবে জড়িত হয়ে পড়ে। তুলনামূলকভাবে এ রাজ্যে কম লড়াই সংঘটিত হলেও অ্যালাবামার পক্ষ থেকে যুদ্ধে প্রায় ১২০,০০০ সৈন্য যোগ দেয়। যুদ্ধে প্রায় ৩৫,০০০ সৈন্য মারা যায়।

কনফেডারেসির পতন এবং মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী (যা প্রাক্তন ক্রীতদাসদের নাগরিকত্ব প্রদান করে) রাষ্্রীয় আইনসভার প্রত্যাখ্যানের পর, অ্যালাবামাকে ১৮৬৭ সালে সামরিক শাসনের অধীনে নেয়া হয়। পরের বছর রাষ্ট্র একটি নতুন সংবিধান অনুমোদন করে যা কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের নাগরিক অধিকার রক্ষা করে, এবং অ্যালাবামাকে পুনরায় ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

১৮৭৪ সালে ডেমোক্র্যাটরা জালিয়াতি এবং সহিংসতা দ্বারা প্রভাবিত একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আইনসভা এবং গভর্নরের কার্ষালয়ের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর অ্যালাবামায় পুনর্গঠন কাজের সমান্তি ঘটে। ১৮৭৫ সালে আরেকটি সংবিধান রচনার মাধ্যমে আইনসভা “ব্রেইন সংশোধনী” পাস করে। এ সংশোধনী জনগণের অর্থ ধর্মীয় মতাদর্শের বিদ্যালয়ের অর্থায়নে ব্যবহারের উপর নিষিদ্ধাজ্া প্রদান করে। একই বছর বর্ণবাদী বিদ্যালয়ের পক্ষে আইন পাশ করা হয়। ১৮৯১ সালে রেলওয়ে এবং যাত্রীবাহী গাড়ির জন্য বর্ণবৈষম্যের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯০১ সালে সংবিধানে অধিকাংশ আফ্রিকান আমেরিকান এবং অনেক দরিদ্র শ্বেতাঙ্গদের ভোটাধিকার থেকে বিচ্ছিন্ন করার পর, অ্যালাবামা আইনসভা দৈনন্দিন জীবনে বর্ণবৈষম্যের ব্যবস্থা আরোপ করতে আরো আইন পাশ করে।

১৯০০ সালে অ্যালাবামার গ্রামীণ, দরিদ্র এবং কালো অধিবাসীরা “গ্রেট মাইগ্রেশন” এর মাধ্যমে উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলিতে অভিবাসন শুরু করে। এসব অঞ্চলে বিশ্বযুদ্ধের সময় সস্তা বিদেশী শ্রম সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল।

রাজ্যে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বছরগুলোতে অ্যালাবামার অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধ অন্য ষে কোন ঐতিহাসিক ফ্যাক্টরের চেয়ে রাজ্যব্যাপী শিল্পায়ন ঘটাতে বেশি সাহায্য করেছে। ১৯৪০ এবং ৫০-এর দশকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মধ্য দিয়ে রাজ্যের কৃষি অর্থনীতির বিপ্লব সম্পন্ন হয়।

বর্ণবৈষম্য বা জাতিগত পৃথকীকরণ অ্যালাবামার সামাজিক কাঠামোর প্রতি অব্যাহতভাবে অনমনীয় থেকে যায় এবং কার্যকরভাবে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা থেকে দুরে সরিয়ে রাখে। ১৯৫৪ সালে জনশিক্ষায় বর্ণবৈষম্যকে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট কতৃক অসাংবিধানিক ঘোষণা কৃষ্ণাঙ্গ আ্যালাবামিয়ানদের কাজে সম্পৃক্ত হয়ে জাতিগত সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখতে উৎসাহিত করে।

মন্টগোমারি ১৯৫৫-৫৬ সালে বাস বয়কটের মতো উল্লেখযোগ্য নাগরিক অধিকার কর্মকাণ্ডের স্থান হিসেবে আন্তর্জাতিক গুরুত্ব অর্জন করে, যা মাটিন লুথার কিং জুনিয়রকে দেশের মধ্যে পরিচিতি এনে দেয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডগুলি হচ্ছে ১৯৬১ সালের স্বাধীনতা যাত্রা; ১৯৬৩ সালে বার্মিংহামের রাস্তায় বিক্ষোভ, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ কুকুর লেলিয়ে দেয়; গভর্নর জর্জ সি ওয়ালেস কর্তৃক একই বছর রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণবৈষম্য বন্ধ করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা; ১৯৬৩ সালে বার্মিংহাম সানডে স্কুলে একটি বিস্ফোরণে চারজন কৃষ্ণাঙ্গ শিশুর মৃত্যু; এবং ১৯৬৫ সালে সেলমা থেকে মন্টগোমারি পর্যন্ত পদযাত্রা।

কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলনের ফলশ্রতিতে এই সময় মার্কিন ফেডারেল আইনের প্রধান সংশোধনীর সুচনা হয়। ১৯৬৪ সালের নাগরিক অধিকার আইন অবশেষে সরকারী আবাসনের ক্ষেত্রে বর্ণবৈষম্যের অবসান ঘটায় এবং কর্মসংস্থানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে। ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইন কৃষ্ণাঙ্গদের রাজনৈতিক অধিকার সীমিত করার অধিকাংশ উপায় প্রতিহত করে।

এই সব কর্মকাণ্ডের ফলে, আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিকরা সরকারী সেবা, বৃহত্তর শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ, এবং মুক্ত রাজনৈতিতে আরো ভালো প্রবেশাধিকার লাভ করে। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নিবন্ধিত কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের অনুপাত নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং আফ্রিকান আমেরিকানরা রাষ্ট্র এবং স্থানীয় সরকার পদে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় নির্বাচিত হয়। কিছু পেশা এবং সরকারি চাকুরির সুযোগ আফ্রিকান আমেরিকানদের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, যদিও রাষ্ট্রে দারিদ্র্য কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্চ আনুপাতিক হার অব্যাহত থাকে। অনেক পেশাদার এবং নাগরিক সংস্থা এবং অধিকাংশ স্কুল বৈষম্য দুরিকরনে একটি ভাল অবস্থান অর্জন করে। কখনও কখনও ধীর এবং অসম্পূর্ণ হলেও সর্ব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়। ২০০৭ সালে চতুর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দাসত্ব প্রতিষ্ঠানে এর ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছিল অ্যালাবামার পরিবর্তিত মনোভাবের প্রতীক।

এক নজরে অ্যালাবামা

রাজধানী : মন্টোগোমারি
বৃহত্তম শহর : বার্মিংহাম
বৃহত্তম মেট্রো : গ্রেটার বার্মিংহাম

সরকার
গভর্নর : কে আইভী (R)
লেফটেন্যান্ট গভর্নর : উইল আইনসওয়ার্থ (R)
সিনেটর : রিচার্ড শেলবী (R)
সিনেটর : টমী টিউবারভিল (R)
উচ্চকক্ষ : সিনেট
নিম্নকক্ষ : হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস
বিচার বিভাগ : সুপ্রিম কোর্ট

আয়তন
মোট আয়তন : ৫২,৪১৯ বর্গ মাইল (১৩৫,৭৬৫ বর্গ কিঃমিঃ)
ভূমি : ৫০,৭8৪ বর্গ মাইল (১৩১,৪২৬ বর্গ কিঃমিঃ)
দৈর্ঘ্য : ৩৩০ মাইল (৫৩১ কিঃমিঃ)
প্রস্থ : ১৯০ মাইল (৩০৫ কিঃমিঃ)
উচ্চতা : ৫০০ ফুট (১৫০ মিটার)
সর্বোচ্চ উচ্চতা : (চিহা পর্বত) ২,৪১৩ ফুট (৭৩৫.৫ মিটার)

জনসংখ্যা (২০১৯)
মোট : ৪,৯০৩,১৮৫
মাঝারি পারিবারিক আয় : $ ৪৮,১২৩

দাপ্তরিক ভাষা : ইংরেজি
২০১০ সালের জরীপ অনুযায়ী কথ্য ভাষা-
ইংরেজি ৯৫.১%
স্প্যানিশ ৩.১%

সময় অঞ্চল
শীত : UTC – 06:00
গ্রীষ্ম : UTC – 05:00

ওয়েবসাইট : alabama.gov

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments