Homeধর্মকথাক্ষমা চাওয়া আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় ইবাদত

ক্ষমা চাওয়া আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় ইবাদত

দেশবাণী ডেস্ক

ইসলাম ক্ষমা প্রসঙ্গে কী বলে? আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া কি ইবাদত? হ্যাঁ, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াকে ইসলামে ইবাদত-বন্দেগি তথা উপাসনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্ষমা চাওয়া যে ইবাদত সে বিষয়টি সুস্পষ্ট করে আল্লাহ তাআলা বলেন- অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)

আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সব সুবিধা প্রদান করবেন। সে কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে মানুষের ক্ষমা চাওয়ার সুশিক্ষা দিয়েছেন।

যুগে যুগে অনেক নবি রাসুল ও তাদের অনুসারীরা তাদের নিজেদের ভুল বা অন্যায় থেকে মুক্তি লাভে আল্লাহর কাছে যে ভাষায় আবেদন করেছিলেন। তার কিছু তুলে ধরা হলো-

হজরত আদম ও মা হাওয়ার আবেদন ছিল এমন-

রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কু-নান্না মিনাল খাছিরিন।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)

অর্থ : হে আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নফসের ওপর জুলুম করেছি। আপনি যদি ক্ষমা না করেন, দয়া না করেন তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।’

হজরত নুহ আলাইহিস সালামের বক্তব্যে তাওবা ও ইস্তেগফার

রাব্বিগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও ওয়া লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাতি ওয়া লা তাযিদিজ জালিমিনা ইল্লা তাবারা।’

অর্থ: হে আমার রব! আপনি আমাকে আমার পিতা-মাতাকে এবং আমার ঘরে যারা ঈমানের সঙ্গে প্রবেশ করেছে এবং মুমিন নর-নারীদেরকে ক্ষমা করুন। আপনি যালেমদেরকে ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন।’ (সুরা নুহ : আয়াত ২২)

হজরত মুসা আলাইহি সালামের বক্তব্যে তাওবা ও ইস্তিগফার

রাব্বি ইন্নি জালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাগাফারা লাহু ইন্নাহু হুয়াল গাফুরুর রাহিম।’

অর্থ : হে   আমার রব! নিশ্চয়ই আমি আমার প্রতি যুলুম করেছি। তাই আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। তাই তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয়ই তিনি বড় ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)

আল্লাহ তাআলা পথে সংগ্রামকারীদের প্রার্থনার কথা তুলে ধরে আল্লাহ বলেন-

‘আর বহু নবি ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের আনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে। আল্লাহর পথে তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর পথে (কাজ করতে গিয়ে) তারা হেরেও যায়নি, কান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৬)

নবি-রাসুল ও আনুগত্যশীলদের ক্ষমা চাওয়ার ধরণ ছিল এমন-

রাব্বানাগফির লানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)

অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের কাজে যে সব বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে (সে পাপ থেকেও)। আর আমাদেরকে দৃঢ় রাখ এবং কাফের অবিশ্বাসীদের ওপর আমাদের বিজয় দান কর।’

সর্বোপরি ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি তার রহমত কামনায় আল্লাহর শেখানো এ দোয়ার বিকল্পও নেই। তিনি বলেন-

‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা আরহামুর রাহিমিন।’

অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের প্রতি আপনার ক্ষমা ও রহমত দান করুন। এবং আপনি দয়া প্রদর্শনকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম দয়ালু।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)

সুতরাং মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে তারই শেখানো ভাষায় কুরআনে বর্ণিত দোয়াগুলোর মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়া। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকের অনেক স্থানে ক্ষমা লাভের উপায় তুলে ধরে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে উত্তম ইবাদতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজেদেরকে ইবাদত বন্দেগিতে একনিষ্ঠ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments