Thursday, November 7, 2024
Homeদেশের খবরচুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংকট

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংকট

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। গত ৮ দিন ধরে সরকারি এ হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। এমনকি বাইরের ফার্মেসিগুলোতেও জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। ভ্যাকসিন না পেয়ে বাধ্য হয়ে রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। গত ৭ দিনে কুকুর, বিড়াল কিংবা অন্য প্রাণীর আঁচড়ে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এক হাজারেরও বেশি মানুষ জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিয়েছে। এর মধ্যে সবগুলো ভ্যাকসিন বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়েছে তাদের। হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। তাই রোগীদের ভ্যাকসিন কিনে আনতে হচ্ছে। এদিকে, প্রতিকার জানতে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবাধায়কের সরকারি মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনি এ প্রতিবেদকের নম্বর ‘ব্লাকলিস্ট’ করে দেন। আজ বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন কুকুর ও বিড়ালে কামড় কিংবা আঁচড় দেয়া রোগীরা ভ্যাকসিন নিতে হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার ২০১৮ নম্বর কক্ষের সামনে ও আশপাশে ভিড় জমাচ্ছেন। যে কক্ষে আক্রান্ত রোগীদের ভ্যাকসিন দেয়া হয়, সেই কক্ষের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবরিনা ইয়াসমিন ও আরও দুজন বসে ছিলেন। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যের ভ্যাকসিন না থাকায় দায়িত্বরত নার্স রোগী কিংবা তার স্বজনদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনার কথা বলছেন। সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘গত বুধবার সরকারি ভ্যাকসিন শেষ হয়ে গেছে। আমরা স্টোরকিপারকে জানিয়েছি, খুব দ্রুতই ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে।’ বিড়ালের আচরের আহত হয়ে সদর উপজেলার বসু ভান্ডারদহ গ্রামের বেগম খাতুন তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে এসে তিনি বলেন, ‘সকালে আমার মেয়ের বাম হাতে বিড়ালে আচর দেয়। পরে আমি সাথে সাথেই মেয়েকে নিয়ে সদর হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে আসার পর এক নার্স আপা বলেন ভ্যাকসিন শেষ হয়ে গেছে। বাইরে থেকে কিনে আনেন। পরে ভ্যাকসিন কেনার জন্য বাইরের অনেক ফার্মেসিতে খুঁজে কোথাও পাইনি। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’ চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার আসাদুল হক বলেন, ‘আমার বাম হাতে কয়েকদিন আগে বিড়ালে আঁচড় দিয়েছিল। সদর হাসপাতাল থেকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দিলেও দ্বিতীয় ডোজ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। পরে আজ ভ্যাকসিন দেয়ার দিন ছিল। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই। বাইরে থেকে কিনতে গেছি সেখানেও পাইনি।’ সদর উপজেলার উত্তর চাঁদপুর গ্রামের শাহারবানু নামের আরেকজন বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে আমার হাতে বিড়ালে আচর দিলে সদর হাসপাতাল থেকে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ডোজ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। আজ (গতকাল) ভ্যাকসিন দেয়ার দিন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে নেই, বাইরের ফার্মেসিতেও পাইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এত বড় একটা হাসপাতাল, অথচ এখানে ভ্যাকসিন নেই। আমি এখানে কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করব। আমার কেনার সামর্থ্য আছে, কিন্তু সবার নাও থাকতে পারে।’ এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের স্টোরকিপার হাদিউজ্জামানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসানের সরকারি মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনি এ প্রতিবেদকের নম্বর ব্লাকলিস্ট করে রাখেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আএরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন বেশ কিছুদিন আগে শেষে হয়ে গেছে। চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই পেয়ে যাবো।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments