দীর্ঘ ১২ বছর পর বিপিএলে প্রত্যাবর্তন করে চিটাগাং কিংস। ফিরে আসার পরই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় দলটি। তবে শেষ পর্যন্ত শিরোপা ছোঁয়া হলো না তাদের। জমজমাট ফাইনালে ফরচুন বরিশালের কাছে ৩ উইকেটে হেরে ট্রফি হাতছাড়া করল বন্দর নগরীর দল। অন্যদিকে, এই জয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতলো তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বরিশাল।
ফাইনালে শেষ ৬ বলে ৮ রান প্রয়োজন ছিল ফরচুন বরিশালের। চিটাগাং কিংসের হয়ে শেষ ওভারে বল করতে আসেন হুসাইন তালাত। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রিশাদ হোসেন, ফিরতি বলে এক রান নিয়ে ম্যাচ সমতায় আনেন তিনি। চতুর্থ বলে ওয়াইডের সুবাদে ৩ বল হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে বরিশালকে বড় লক্ষ্য তাড়া করতে হতো। চিটাগাং কিংস ১৯৫ রানের রেকর্ড লক্ষ্য দেয় বরিশালকে। তবে তামিম ইকবাল দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তিনি। ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৫৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে ফেরেন তামিম। তার বিদায়ের পর শরিফুল ইসলামের এক ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বরিশাল। নবম ওভারের চতুর্থ বলে ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় চিটাগাং। এরপর এক ওভারের ব্যবধানে হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম আউট হলে ম্যাচ রোমাঞ্চকর মোড় নেয়।
তবে কাইল মায়ার্সের ৪৬ রানের ইনিংস আবারও বরিশালকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ২৩ রান দরকার থাকাকালীন শরিফুল ইসলাম তাকে আউট করেন এবং পরের বলেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন এই বাঁহাতি পেসার। কিন্তু শেষ ১২ বলে ২০ রানের সমীকরণ সহজ করে দেন রিশাদ হোসেন। ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বরিশালকে জয় এনে দেন তিনি।
এই জয়ে বিপিএলে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতল ফরচুন বরিশাল। অন্যদিকে, ১২ বছর পর ফাইনালে উঠে আবারও হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো চিটাগাং কিংসকে। প্লেয়ার অফ দা ম্যাচ হয়েছেন তামিম ইকবাল।
দল ফাইনালে না উঠলেও এবারের বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতেছে মিরাজ।
এবারের বিপিএলে ১৪ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৫৫ রান করেছেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। এ ছাড়াও বল হাতে শিকার করেছেন ১৩ উইকেট।
এদিকে এবারের আসরে ব্যাট হাতে সেরা হয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম ও বোলিংয়ে তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে চিটাগংয়ের কাছে হেরে বাদ পড়ে নাঈমের দল খুলনা টাইগার্স। তবে রানে তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছেন নাঈম। এই আসরে সবগুলো ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ৪২ গড়, ১টি সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে ১৪ ম্যাচে ৫১১ রান করে সবার ওপরে রয়েছেন তিনি।
১২ ম্যাচে ৪৮৫ রান করে দ্বিতীয় স্থানের রয়েছে গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনার তানজিদ তামিম।
তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ১৪ ম্যাচে ৪৩১ রান করা গ্রাহাম ক্লার্ক। আর চারে রয়েছেন ১৪ ম্যাচে ৪১৩ রান করে তামিম ইকবাল। পাঁচে রয়েছে রাজশাহী এনামুল হক বিজয়। ১২ ম্যাচে ৩৯২ রান করেছেন তিনি। একটি সেঞ্চুরিও রয়েছে তার।
এদিকে সর্ব্বোচ উইকেট শিকারি পুরস্কার যে তাসকিন তা আগে থেকে নিশ্চিত ছিল। দল বাদ পড়লেও ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট শিকার করে বার শীর্ষে রয়েছেন এই টাইগার পেসার।
১১ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আকিভ জাভেদ। সমান ম্যাচ খেলে তিনে রয়েছেন ফাহিম আশরাফ। ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে চারে রয়েছেন খালেদ আহমেদ। পাঁচে থাকা খুশদিল শাহর উইকেট ১৭টি।